Ghargerostir Rajniti
একটি ঘরও একটি দেশের রাজনীতির মতো জটিলতা নিয়ে বেড়ে ওঠে। সাংসারিক জীবনে নারী সেই ঘর-গেরস্থালির রাজনীতির শিকার। সে-ও হয়ে যায় একটি বিশেষ চরিত্র।এই গ্রন্থে মােট সতেরটি প্রবন্ধ সংকলিত হয়েছে। প্রতিটি প্রবন্ধে বাংলাদেশের সমাজ প্রেক্ষিতে নারীর অবস্থা ও অবস্থানের বিশ্লেষণ করা হয়েছে। নারীবাদী প্রেক্ষিত থেকে সমাজ-ভাবনার চিত্রটি উঠে এসেছে। প্রবন্ধগুলােতে। আমাদের বিশ্বাস ঘরগেরস্থির রাজনীতি শিরােনামে প্রবন্ধটিতে ভাষা বিষয়ে যে ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে তা নিঃসন্দেহে নতুনত্বের দাবিদার। পুরুষতন্ত্র ভাষাকে নিয়ন্ত্রিত করে নারীকে অবদমনের যে পরিসর তৈরি করেছে দীর্ঘ সময় ধরে, এই প্রবন্ধ থেকে তার স্বরূপটি বােঝা যায়। নারীর প্রজ্ঞা কতভাবে আলােকিত করতে পারে সমাজ ও রাষ্ট্রকে সেটিও উন্মােচন করা হয়েছে। দেখানাে হয়েছে দুর্নীতি থেকে নারীও মুক্ত নয়। দুর্নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় নারীর জীবনের নানা দিক। দুর্নীতির। কবলে নিমজ্জিত হয় নারীর সুস্থ চিন্তাও। ক্ষমতা পরাভূত করে নারীকে। সাংস্কৃতিক চেতনা নারীর জীবনের। ইতিবাচক-নেতিবাচক ধারণায় পুরুষশাসিত সমাজের ভিন্ন মাত্রা। সাংস্কৃতিক বােধ তৈরি করতে পারে জেন্ডার সমতার ক্ষেত্রটি, কিন্তু সহজে হয় না। যেটুকু হয় তা। আমূল পরিবর্তনের গতিকে বেগবান করে না।..
- Brand: Ittadi Grantho Prokash
- Product Code: Ittadi
- Availability: In Stock
- Author Name: Selina Hossain ,
- ISBN: 978-984-90468-9-9
- Total Pages: 284
- Edition: 2nd
- Book Language: Bangla
- Available Book Formats:Hard Cover
- Year: 2019
- Publication Date: 2021-09-17
একটি
ঘরও একটি দেশের রাজনীতির মতো জটিলতা নিয়ে বেড়ে ওঠে। সাংসারিক জীবনে নারী
সেই ঘর-গেরস্থালির রাজনীতির শিকার। সে-ও হয়ে যায় একটি বিশেষ চরিত্র।এই
গ্রন্থে মােট সতেরটি প্রবন্ধ সংকলিত হয়েছে। প্রতিটি প্রবন্ধে বাংলাদেশের
সমাজ প্রেক্ষিতে নারীর অবস্থা ও অবস্থানের বিশ্লেষণ করা হয়েছে। নারীবাদী
প্রেক্ষিত থেকে সমাজ-ভাবনার চিত্রটি উঠে এসেছে। প্রবন্ধগুলােতে। আমাদের
বিশ্বাস ঘরগেরস্থির রাজনীতি শিরােনামে প্রবন্ধটিতে ভাষা বিষয়ে যে ব্যাখ্যা
তুলে ধরা হয়েছে তা নিঃসন্দেহে নতুনত্বের দাবিদার। পুরুষতন্ত্র ভাষাকে
নিয়ন্ত্রিত করে নারীকে অবদমনের যে পরিসর তৈরি করেছে দীর্ঘ সময় ধরে, এই
প্রবন্ধ থেকে তার স্বরূপটি বােঝা যায়। নারীর প্রজ্ঞা কতভাবে আলােকিত করতে
পারে সমাজ ও রাষ্ট্রকে সেটিও উন্মােচন করা হয়েছে। দেখানাে হয়েছে দুর্নীতি
থেকে নারীও মুক্ত নয়। দুর্নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় নারীর জীবনের নানা
দিক। দুর্নীতির। কবলে নিমজ্জিত হয় নারীর সুস্থ চিন্তাও। ক্ষমতা পরাভূত
করে নারীকে। সাংস্কৃতিক চেতনা নারীর জীবনের। ইতিবাচক-নেতিবাচক ধারণায়
পুরুষশাসিত সমাজের ভিন্ন মাত্রা। সাংস্কৃতিক বােধ তৈরি করতে পারে জেন্ডার
সমতার ক্ষেত্রটি, কিন্তু সহজে হয় না। যেটুকু হয় তা। আমূল পরিবর্তনের
গতিকে বেগবান করে না।
সেলিনা হোসেনের জন্ম ১৪ জুন, ১৯৪৭, রাজশাহী শহরে। পৈতৃক নিবাস বর্তমান লক্ষ্মীপুর জেলার হাজীরপাড়া গ্রাম। পিতা এ কে মোশাররফ হোসেন রাজশাহী রেশমশিল্প কারখানার পরিচালক ছিলেন। মাতার নাম মরিয়মন্নেসা বকুল। পিতা-মাতার চতুর্থ সন্তান। ষাটের দশকের মধ্যভাগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে লেখালেখির সূচনা। সেই সময়ের লেখা নিয়ে প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘উৎস থেকে নিরন্তর’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৯ সালে।উপন্যাস, গল্প, শিশুসাহিত্য, প্রবন্ধ, ভ্রমণসহ লেখালেখির নানাক্ষেত্রে তিনি বিচরণ করেছেন, করছেন। সেলিনা হেসেনের লেখার জগৎ বাংলাদেশের মানুষ, তার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। বেশ কয়েকটি উপন্যাসে বাংলা লোক-পুরাণের উজ্জ্বল চরিত্রসমূহকে নতুনভাবে তুলে আনেন। তাঁর উপন্যাসে প্রতিফলিত হয় সমকালের সামাজিক ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-সংকটের সামগ্রিকতা। বাঙালির অহঙ্কার ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ তাঁর লেখায় নতুন মাত্রা অর্জন করে। জীবনের গভীর উপলব্ধির প্রকাশকে তিনি শুধু কথাসাহিত্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেন না, শাণিত ও শক্তিশালী গদ্যের নির্মাণ প্রবন্ধের আকারেও উপস্থাপন করেন। নির্ভীক তাঁর কণ্ঠ-কথাসাহিত্যে, প্রবন্ধে।ভ্রমণ তাঁর নেশা। সুযোগ পেলেই ছুটে যান বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে সর্বত্র। সমুদ্র উপকূল, পার্বত্য এলাকা, হাওড় অঞ্চল, প্রত্যন্ত গ্রাম সেখানকার কল্লোলিত বিচিত্র জীবন যেমন তাঁর লেখায় উঠে আসে, তেমনি ওদের সঙ্গে সময় কাটাতেও তিনি ভালোবাসেন। সংকীর্ণ জাতীয়তায় আক্রান্ত নন তিনি। পৃথিবী তাঁর কাছে ‘বাউন্ডলেস ইউনিভার্স’। সব কিছুর ঊর্ধ্বে মানুষ। তাই সেই মানুষের জীবনযাত্রার বৈচিত্র্যকে খুব কাছে থেকে দেখার আগ্রহে তিনি ভ্রমণ করেছেন ভারত, নেপাল, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন, ইংল্যান্ড, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি প্রভৃতি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল।গবেষণামূলক লেখাও লিখতে হয়েছে। ১৯৮০ সালে কুয়ালালামপুরে এশিয়ান কোপাবলিকেশন প্রোগ্রামে, ১৯৮১ সালে ম্যানিলায় এশিয়ান রাইটার্স কনফারেন্সে, ১৯৯১ সালে কলকাতায় জিজ্ঞাসা এডুকেশন সোসাইটিতে, ১৯৯৩ সালে লন্ডনে বিবিসি বাংলা বিভাগের ১৪০০ সালের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে, ১৯৯৫ সালে আমস্টারডামে ইউরোপীয়ান নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশ স্টাডিজে এবং ১৯৮৮ সালে একই প্রতিষ্ঠানের আমন্ত্রণে বাথ ইউনিভার্সিটিতে সেমিনারে যেসব প্রবন্ধ পড়েছেন, তা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়।অংশগ্রহণ করেছেন দেশ ও বিদেশে অনুষ্ঠিত অসংখ্য সাহিত্যসভায়। ১৯৯৬ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ বিশ্ব বইমেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে অবমুক্ত করেছেন বইমেলার ক্যাটালগ। ১৯৯৭ সালে আসামের শিলচরে অনুষ্ঠিত সাহিত্যসভায় ছিলেন বিশেষ অতিথি। একই বছর অংশগ্রহণ করেন আমেরিকার শিকাগোতে অনুষ্ঠিত বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনে। ১৯৯৬ সালে কাঠমুণ্ডুতে ইউনিসেফ আয়োজিত শিশুবিষয়ক ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করেন।রাজশাহীতে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণীতে পড়ার সময়ে বিভাগীয় সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়নশিপ স্বর্ণপদক পান। এরপর ১৯৬৯ সালে প্রবন্ধের জন্য পান ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক স্বর্ণপদক। ১৯৮০ সালে উপন্যাসের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৮১ সালে ‘মগ্নচৈতন্যে শিস’ উপন্যাসের জন্য আলাওল পুরস্কার, ১৯৮২ সালে অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে ‘পোকামাকড়ের ঘরবসতি’ উপন্যাসের জন্য কমর মুশতরী পুরস্কার, ১৯৯৪ সালে ‘অনন্যা’ ও ‘অলক্ত’ পুরস্কার এবং ১৯৯৮ সালে জেবুন্নেসা ও মাহবুবুল্লাহ ইনস্টিটিইট প্রদত্ত সাহিত্য পুরস্কার ও স্বর্ণপদক ও ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘একুশে পদক’ তাঁর সাহিত্যসাধনার স্বীকৃতি। এছাড়া ১৯৯৪-৯৫ সালে তিনি তাঁর ত্রয়ী উপন্যাস ‘গায়ত্রী সন্ধ্যা’ রচনার জন্য ফোর্ড ফাউন্ডেশন ফেলোশিপ পেয়েছিলেন।ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি, কানাড়ি, রুশ, মালে, ফরাসি প্রভৃতি ভাষায় তাঁর বেশ কয়েকটি গল্প অনূদিত হয়েছে। ১৯৮৭ সালে ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’ এবং ১৯৮৩ সালে ‘নীল ময়ূরের যৌবন’ এবং ১৯৯৯ সালে ‘টানাপোড়েন’ উপন্যাসের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ পায়।পশ্চিমবঙ্গের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর ‘যাপিত জীবন’ এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নিরন্তর ঘণ্টাধ্বনি’ উপন্যাস পাঠ্যসূচিভুক্ত।

